উত্তরার ৩ ও ৫ নম্বর সেক্টরের সেতুসংলগ্ন জলাশয়ে বিষ প্রয়োগ করে বিপুল পরিমাণ মাছ হত্যার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের খুঁজে বের করতে পুলিশের ঔদাসীন্য খুবই দুর্ভাগ্যজনক বলে বিবেচিত হবে। বিষয়টি শুধু শত্রুতাবশত দুষ্কর্ম তা-ই নয়, পরিবেশ বিষয়ে জনসচেতনতা যে কতটা অপাঙ্ক্তেয় অবস্থায় রয়েছে, সেটাও এই ঘটনায় ইঙ্গিতবহ। শুধু মাছ নয়, বিষক্রিয়ার ফলে অন্যান্য পরিবেশগত বিপর্যয় কী হতে পারে, তা হয়তো কারও শিরঃপীড়ার কারণ হবে না।
ইজারাদাতার মাছ ছাড়ার অধিকার ছিল কি ছিল না, সে প্রশ্ন ভিন্ন। অথচ যখন জানতে চাওয়া হয়েছে, তখন ইজারাদাতার মেয়াদ যে উত্তীর্ণ হয়ে গেছে, সেটাই কেউ কেউ বড় করে দেখিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট সরকারি বিভাগ যদিও নিশ্চিত করেছে যে ইজারার সময় পেরিয়ে যাওয়ার কারণে ইজারাদাতাকে মাছ তুলে নেওয়ার জন্য নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। যাঁরা ইজারাদারকে ‘ভাগ’ দিতে চাপ দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে, কর্তৃপক্ষের উচিত হবে, তা বিবেচনায় রেখে সুষ্ঠু তদন্ত করা। প্রায় ১২ লাখ টাকা মূল্যের মাছ হত্যার সঙ্গে যাঁরা জড়িত, তাঁদের শাস্তি পাওয়া দরকার। তাঁদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করা দরকার।
আমরা বিশ্বাস করি, পরিবেশের প্রতি সচেতনতা বাড়ানো এবং সমাজে দৃষ্টান্ত তৈরির স্বার্থে শুধু পুলিশ বিভাগ নয়, পরিবেশ অধিদপ্তরও এর তদন্তে এগিয়ে আসতে পারে। আমরা বিশ্বাস করি, বিষপ্রয়োগের সঙ্গে জড়িত দুষ্কৃতকারীদের খুঁজে বের করা কঠিন নয়। আমাদের প্রত্যাশা, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সব স্তরের সদস্যদের মধ্যে যাতে এ ধরনের অপরাধকে সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়ার মনমানসিকতা তৈরি হয়, সেদিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সম্ভাব্য বিপন্নদের তালিকায় আমাদের দেশের নাম অন্তর্ভুক্ত হলেও এ বিষয়ে জনসচেতনতা দুঃখজনকভাবে আর দশটা বিষয়ের মতো এখানেও মামুলি রয়ে গেছে। আমরা বিশ্বাস করি, পরিবেশ–সংক্রান্ত যেকোনো অপরাধের তদন্ত ও তার দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে।