রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র যুগ্ম আহবায়ক মো: বজলুল হক মন্টু মঙ্গলবার (২৭ আগষ্ট) বাদী হয়ে রাজশাহীর ৪ জন সাংবাদিকের নাম উল্লেখপূর্বক অজ্ঞাতনামা আরও ৪/৫ জনের বিরুদ্ধে রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় একটি মামলা (বোয়ালিয়া মডেল থানার মামলা নং ৪২) দায়ের করেন৷
মামলায় অভিযুক্ত আসামীরা হলেন, কালের কণ্ঠের রাজশাহী ব্যুরোর মো: রফিকুল ইসলাম, গাজী টিভির রাজশাহী প্রতিনিধি রাশেদ রিপন, করতোয়া রাজশাহী প্রতিনিধি রোজিনা সুলতানা, এবং দৈনিক উপচারের আসগর আলী সাগরসহ অজ্ঞাত ৪/৫জন।
মামলার এজাহার মারফত জানা যায়, ৩ ডিসেম্বর, ২০২২ সালে রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদরাসা মাঠে আয়োজিত বিএনপির মহাসমাবেশ কে সাফল্য মন্ডিত করার জন্য বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান জিয়া, বিএনপির চেয়ারপারসন ও ৩বারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি সম্বলিত মিডিয়া কার্ড ইস্যু করা হয়। সে সময় অনেক সাংবাদিক সে কার্ড স্বতঃস্ফূর্তভাবে গ্রহণ করে। কিন্তু, মামলায় উল্লেখিত অভিযুক্তরা বিএনপির মালোপাড়া কার্যালয়ে গত ২ ডিসেম্বর, ২০২২ ইং তারিখ দুপুর ২টার সময় উপস্থিত হলে মন্টু (মামলার বাদি) তাদের মিডিয়া কার্ড দিলে মামলায় উল্লেখিত সাংবাদিকরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে মিডিয়া কার্ড গ্রহণ না করে মন্টু’র নিকট ১ লক্ষ টাকা (১,০০,০০০) চাঁদা দাবি করে এবং মন্টু চাঁদা প্রদানে অস্বীকার জানালে তাকে হত্যার হুমকি দেয়। পরবর্তীতে আসামীরা বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সম্পর্কে আপত্তিকর, অপমানজনক ও হেয় প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে তাদের কে খুনি ও সাজাপ্রাপ্ত আসামিসহ বিভিন্ন মানহানিকর মন্তব্য করে নিজেদের ফেসবুক আইডি থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রচার করে। উক্ত মানহানিকর সংবাদটি আরটিভিতে ৩ডিসেম্বর, ২০২২ সালে প্রচারিত হয়। যার ফলে জনগণের মধ্যে বিরূপ মনোভাব তৈরি হয় বলে জানিয়েছেন মামলার বাদি মন্টু। মন্টু জানায়, ততকালীন রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকায় বিষয়টি নিয়ে তারা মামলা দায়ের করতে পারেননি। বর্তমানে স্বৈরাচার খুনি হাসিনা সরকারের পতনের পর ন্যায্য বিচারের পথটি উন্মুক্ত হওয়ায় দলের নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনার পর তিনি এখন মামলা দায়ের করেছেন।
বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাসুদ পারভেজ সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা ধার্য করার বিষয়টি দৈনিক জবাবদিহি কে নিশ্চিত করেছেন।
উল্লেখ্য, বিগত স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের সময়ে রাজশাহীর কতিপয় কিছু চাটুকার সাংবাদিক নিজেদের সাংবাদিকতা পেশার মহত্ত্বকে জলাঞ্জলি দিয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীদের তাবেদার ও হুকুমের গোলামে পর্যবসিত হয়েছিল বলে অভিযোগ আছে। তারা বিভিন্ন সময় ক্ষমতাসীন স্বৈরাচার সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য বিরোধী দল গুলোর নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা আপত্তিকর সংবাদ প্রকাশ করতো বলেও অনেকে জানান। স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের চাটুকারিতা এবং তাদের আদেশ ও মন মতো সংবাদ প্রকাশ করে অনেক সাংবাদিক নামধারীরা বিপুল অর্থবিত্তের মালিক হয়েছে বলেও অভিযোগ আছে।
মামলার বাদি মন্টু অভিযোগ করে বলেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের চাটুকার সাংবাদিকরা উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সম্পর্কে আপত্তিকর ও রাজনৈতিক মন্তব্য প্রদান করে। কিছু আওয়ামী পন্থি সাংবাদিকরা বিভিন্ন রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন ও বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের উপর চাপ সৃষ্টির জন্য নানান সময় মিথ্যা, বানোয়াট ও বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
বিএ..