আজ থেকে রাজশাহীর বাজারে আসছে গোপালভোগ আম। জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ গোপালভোগ আম বাজারজাতকরণের এই সময় নির্ধারণ করে দেন।
জেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক, ৪ মে থেকে গুটি আম সংগ্রহের মধ্য দিয়ে শুরু হয় এবারের আম পাড়া কার্যক্রম। গত বছর থেকে ১১ দিন আগে মৌসুম শুরু হলেও এবার আম পরিপক্ব হতে কিছুটা সময় বেশি লেগেছে। এ কারণে এতদিন হাতে গোনা কয়েক ভ্যান আম আসত রাজশাহী জেলার সবচেয়ে বড় আমের মোকাম বানেশ্বর বাজারে। তবে আজ সকাল থেকেই এই বাজারে আসতে শুরু করেছে গোপালভোগ আম।
বানেশ্বর বাজারের আম ব্যবসায়ী নুরুল হকের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘গতবারের চেয়ে এবার ১১ দিন আগে আম পাড়ার মৌসুম শুরু হয়েছে। কিন্তু পরিপক্ব না হওয়ায় আম একটু দেরিতে সংগ্রহ শুরু করেছেন চাষিরা। তবে দুই-এক দিন আগ থেকে স্বল্প পরিসরে কিছু আম বাজারে এলেও নিয়মানুসারে আজ থেকে গোপালভোগ আসা শুরু হলো।
আম ব্যবসায়ী নুরুল হক আরও বলেন, ‘বাজারে তেমন আম না আসায় ক্রেতাও অনেক কম। তাই কেনা-বেচাও কম হচ্ছে। প্রতিমণ আম প্রকারভেদে ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর আজ প্রথম দুই-এক ভ্যান গোপালভোগ আম এসেছে। এগুলো বিক্রি হচ্ছে গড়ে ১ হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা মণ।’
বানেশ্বর এলাকার আমচাষি শাজাহান আলী বলেন, ‘আম কেনাবেচা কয়েক দিন আগে শুরু হলেও আজ প্রথম এক ভ্যান আম নিয়ে এসেছি। তবে বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতার সংখ্যা খুবই কম। স্থানীয় আড়তদারেরা প্রতিমণ আমের দাম বলছেন ১ হাজার ২০০ টাকা। আমি ১ হাজার ৫০০ টাকা বিক্রি করতে চাচ্ছি।’
বানেশ্বর আমের বাজার দেখতে আসা শাহাবাজপুর এলাকার চাষি মাহবুবর রহমান বলেন, ‘এ বছর বাগানগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণ মুকুল দেখা দিলেও শেষ পর্যন্ত আমের ফলন কম হয়েছে। কারণ, এবার মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টি হয়নি। মাত্রাতিরিক্ত তাপ প্রবাহের কারণে অনেক মুকুল ও কুঁড়ি শুকিয়ে ঝড়ে গেছে। তা ছাড়া সম্প্রতি শিলাবৃষ্টি হয়েছে। এতে অনেক আম ফেটে যায়। এরপর কিছু আমে দেখা দেয় পচন রোগ। সব মিলিয়ে এ বছর বাগানমালিকেরা কিছুটা লোকসানের আশঙ্কায় রয়েছেন।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নুরুল হাই মোহাম্মদ আনাছ বলেন, ‘জেলার সর্ববৃহৎ আমের মোকাম পুঠিয়ার বানেশ্বর বাজার। আমের মৌসুম শুরু হওয়ার পর কোন আম কখন সংগ্রহ করতে হবে সে বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাগানমালিক ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় হয়েছে। তাই আম সরবরাহে যেন কোনো অনিয়ম না হয়, তা পর্যবেক্ষণ করতে আমের আড়তগুলোতে আমাদের থেকে সার্বক্ষণিক মনিটরিং থাকবে।’
বিএ