সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:১৭ অপরাহ্ন

রাবিতে ‘ছাত্রলীগের নেতৃত্বেই সংঘর্ষের সূত্রপাত’ দাবি ৮ ছাত্র সংগঠনের

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপলোডের সময় : মঙ্গলবার, ১৪ মার্চ, ২০২৩

স্থানীয়দের সঙ্গে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে শাখা ছাত্রলীগ জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) বিকেলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ অভিযোগ তোলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আট ছাত্র সংগঠন।

সংগঠনগুলোর মধ্যে আছে- বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ, বিপ্লবী ছাত্র যুব আন্দোলন, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ও নাগরিক ছাত্র ঐক্য।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সেদিন আল আমিন আকাশ নামের এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে বাস কনট্রাক্টরের বাকবিতণ্ডা হয়। তখন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা আকাশ ও তার বন্ধুদের ওপর মারমুখী হলে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া উপস্থিত হন। তার নেতৃত্বে শিক্ষার্থীরা চড়াও হলে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ বাঁধে। সংঘর্ষ শুরু হলে বিভিন্ন হল থেকে ছাত্রলীগকর্মীরা দেশীয় অস্ত্র রামদা, চাপাতি, রড, হকিস্টিক, স্ট্যাম্পসহ বিনোদপুর গেটে এসে জড়ো হয়। ছাত্রলীগকর্মীদের এ সংঘর্ষ সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষ হিসেবে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার হলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়।
সংঘর্ষ বাঁধলে বিনোদপুরের কিছু ব্যবসায়ীর সঙ্গে মহানগর ছাত্রলীগ নেতা অনিক মাহমুদ বনিসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতারা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। স্থানীয় সন্ত্রাসীরা পুলিশ বক্সে আগুন দিলে আশপাশের কিছু দোকানেও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। ঘটনা এ পর্যন্ত তরান্বিত হলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
সংগঠনগুলো আরও বলেছে, রাত সাড়ে ১০টায় উপাচার্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে কোনো সমাধান না করেই ফিরে আসেন। এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের ওপর টিয়ারশেল, রাবার বুলেট ও ছররা গুলি চালায় পুলিশ। এর ফলে অসংখ্য শিক্ষার্থী আহত হন। একজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে বাস কনট্রাক্টরের সামান্য বাকবিতণ্ডার ঘটনা সংঘর্ষের পর্যায়ে যাওয়া এবং অসংখ্য শিক্ষার্থী আহত হওয়ার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়িত্বে অবহেলা ও নির্লিপ্ত অবস্থান দায়ী।
১২ মার্চ শিক্ষার্থীরা একত্রে উপাচার্যের বাসভবনের গেটের সামনে অবস্থান নিয়ে দাবি আদায়ের চেষ্টা করে। একপর্যায়ে অবরুদ্ধ উপাচার্য কোনো সমাধান না দিয়ে তার বাসভবনে চলে যায়। শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে পুনরায় সহিংস করে তোলার চেষ্টায় মন্নুজান হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি জান্নাত জারার নেতৃত্বে রেল লাইনের ওপর ডামি পুড়িয়ে চারুকলার রেলগেট অবরোধ করে।
এ ঘটনাগুলো ঘটিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং স্থানীয় ক্ষমতাসীনরা ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ, শিক্ষার্থী ও বিনোদপুরের সাধারণ মানুষকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সাধারণ শিক্ষার্থী ও বিনোদপুরের সাধারণ জনগণ।

এসব ঘটনার প্রতিবাদে ছয় দাবি জানিয়েছে সংগঠনগুলো। দাবিগুলো হলো৫. বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও রেল কর্তৃপক্ষের দায়েরকৃত মামলার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
৬. মামলার নামে সাধারণ শিক্ষার্থী ও জনগণদের হয়রানি করা যাবে না এবং শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি আদায়ে রাকসু সচল করতে হবে।

১. ক্যাম্পাসের ভিতর-বাইরে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
২. দায়িত্বে ব্যর্থ হওয়ায় প্রক্টরিয়াল বডির অপসারণ ও উপাচার্যকে শিক্ষার্থীদের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।
৩. আহত শিক্ষার্থীদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে।
৪. ছাত্রলীগের দখলদারিত্ব ও সিট বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে ও নতুন হল নির্মাণ করে শতভাগ আবাসিকতা নিশ্চিত করতে হবে।

বিএ

শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..