মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৪৮ পূর্বাহ্ন

ক্ষুধার জ্বালা ও ছেলে-বউয়ের অত্যাচার সইতে না পেরে থানায় মা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপলোডের সময় : শুক্রবার, ২৭ মে, ২০২২

ক্ষুধার জ্বালা ও ছেলে-ছেলেবউয়ের অত্যাচার সইতে না পেরে থানায় হাজির বৃদ্ধা প্রায় ১৫ বছর আগে স্বামী মারা গেছেন ছেবাতন বেওয়ার (৭০)। সেই থেকে ছেলের সংসারেই আছেন তিনি। কিন্তু শেষ বয়সে এসে কপালে জোটে না চিকিৎসা-ওষুধ পথ্য।

ক্ষুধার জ্বালা ও ছেলে-ছেলেবউয়ের অত্যাচার সইতে না পেরে বৃহস্পতিবার (২৬ মে) বেলা ১১টায় লাঠিতে ভর করে কাজিপুর থানা পুলিশের দ্বারস্থ হন তিনি।

কাজিপুরের সোনামুখী ইউনিয়নের স্থলবাড়ী গ্রামের ছেবাতন বেওয়া জাকাতের কাপড়ে সারা বছর পার করেন। এরপরও খেতে চাইলে জোটে নানা কটু কথা। কিন্তু উপায় না থাকায় ছেলে ও ছেলেবউয়ের ইচ্ছেমতো খাবারে বেঁচে আছেন ছেবাতন বেওয়া।

জানা যায়, বৃহস্পতিবার কাজিপুর থানায় গেরে ভারপ্রাপ্ত কর্তকর্তা (ওসি) শ্যামল কুমার দত্ত বৃদ্ধাকে দেখে এগিয়ে আসেন। তাকে নিজের কক্ষে নিয়ে বসান। এ সময় ক্ষুধায় ছটফট করছিলেন বৃদ্ধা। তাৎক্ষণিক ওসি তার জন্য খাবার এনে দেন। খাবার খাওয়া শেষে ওসি শোনেন কীভাবে ছেলে আর ছেলেবউয়ের অত্যাচার সহ্য করেন। সব শুনে ওসি পুলিশের একটি দলকে দিয়ে বৃদ্ধাকে বাড়িতে পাঠান। যাওয়ার সময় তিনি ছেবাতনকে একটি শাড়ি ও নগদ অর্থসহায়তা করেন।

কাজিপুর থানা পুলিশের দল বৃদ্ধাকে তার বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে ছেলে আসাদুল ইসলাম ও ছেলে বউ চুম্বলী খাতুনকে সতর্ক করে দেয়। তারা বৃদ্ধা মায়ের সঙ্গে আর কোনো দিন খারাপ আচরণ ও ভাত-কাপড়ের কষ্ট দেবেন না বলে পুলিশকে প্রতিশ্রুতি দেন।

এ বিষয়ে কাজিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্তকর্তা (ওসি) শ্যামল কুমার দত্ত  বলেন, শেষ বয়সে এসে ছেলের আর ছেলেবউয়ের অত্যাচার সহ্য করতে হয় বৃদ্ধা মাকে। এই কথা শুনে বৃদ্ধাকে সামান্য সহায়তা করেছি। সেই সঙ্গে ছেলের সংসারে যাতে তিনি আর কষ্ট না পান, সে বিষয়ে তার ছেলে ও ছেলেবউকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। পরে এমন কিছু হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, অসহায়দের সহযোগিতা করাই পুলিশের নৈতিক দায়িত্ব। ভীষণ দুঃখ ও কষ্ট পেয়েছি বৃদ্ধাকে দেখে। আমি শুধু আমার দায়িত্ব পালন করেছি।

বিএ

শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..