শুক্রবার, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৬ অপরাহ্ন

আইনমন্ত্রী আইনি মতামত প্রধানমন্ত্রীর শেখানো, রিজভী

অনুসন্ধান ডেস্ক
  • আপলোডের সময় : বৃহস্পতিবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২১

আইনমন্ত্রী আইনের বিকৃত ব্যাখ্যা দিচ্ছেন, তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শেখানো বক্তব্য দিচ্ছেন।’ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার বিষয়ে করা আবেদনে আইনমন্ত্রী আইনি যে মতামত দিয়েছেন তা প্রধানমন্ত্রীর শেখানো ও বিকৃত বলে মন্তব্য করেছেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় ৫ বছরের কারাদণ্ড নিয়ে কারাগারে যাওয়া বেগম খালেদা জিয়ার দণ্ড পরে আপিলে দ্বিগুণ হয়। পরে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় তার হয় ৭ বছরের কারাদণ্ড।

উচ্চ আদালতে জামিন করাতে ব্যর্থ হওয়ার পর খালেদা জিয়ার স্বজনরা গত বছর প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন নিয়ে যান। সরকারপ্রধানের নির্বাহী আদেশে দণ্ড ছয় মাসের জন্য স্থগিত হওয়ার পর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল থেকে গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় ফেরেন খালেদা জিয়া।

এরপর তার সাময়িক মুক্তির মেয়াদ আরও কয়েক দফা বাড়ানো হয়।

গত ১৩ নভেম্বর বিকেলে খালেদা জিয়াকে গুলশানের বাসভবন ফিরোজা থেকে এভারকেয়ারে ভর্তি করা হয়। শারীরিক অবস্থার কিছুটা অবনতি হওয়ায় পরের দিন ভোরে তাকে সিসিইউতে নেয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসা চলছে তার।
রিজভী বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার ব্যবস্থা না করে আইনের অপব্যাখ্যা দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে। তিনি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছেন। আইনমন্ত্রী আইনের বিকৃত ব্যাখ্যা দিচ্ছেন, তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শেখানো বক্তব্য দিচ্ছেন।’

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘আওয়ামী লীগ উন্নয়ন উন্নয়ন করে, উড়াল সেতুসহ বিভিন্ন প্রজেক্টের কথা বলে। এসব প্রজেক্ট থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছে তারা। বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে যারা গবেষণা করে তারা বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে ১১ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতারা টাকা পাচার করে। আর ৩০ ডিসেম্বর রাতে দিনের ভোট পাচার করেছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সাবেক কিছু কর্মকর্তাকে আমেরিকা নিষিদ্ধ করেছে, সেটা নিয়েও প্রধানমন্ত্রী গলাবাজি করেন, গালাগালি করছে তাদেরকে। প্রধানমন্ত্রী আপনি অন্য দেশকে গালাগালি করেন, আপনার দেশে কি গুম হয় না? তাহলে ইলিয়াস আলী কোথায়? আপনার দেশের রাস্তাঘাটে শুধু রক্ত আর রক্তের ছাপ। আর আপনি বড় বড় কথা বলেন।

‘এ দেশে স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি নাই। কিন্তু আমি বলি, স্বাভাবিক মৃত্যুর নয়, মৃত্যুর পরে এদেশের লাশেরও কোনো গ্যারান্টি নাই।’

গণ-আন্দোলনে দাবি আদায়ের হুঁশয়ারি দিয়ে রিজভী বলেন, ‘জনতার আন্দোলনে এ সরকারের রাজসিংহাসন উল্টে যাবে।’

এর আগে খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করাতে চেয়ে সরকারের কাছে একটি আবেদন করেন তার ভাই শামীম ইস্কান্দার।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে করা আবেদনে আইনি মতামত দিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি ব্যাখ্যায় খালেদাকে বিদেশ পাঠানোর কোনো সুযোগ নেই বলে মত দেন।

বুধবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল খালেদাকে বিদেশ নেয়ার আবেদনে আইনমন্ত্রীর দেয়া আইনি মতামত বিষয়ে জানিয়ে বলেন, তাকে বিদেশ নেয়ার কোনো সুযোগ নেই।

তবে বিষয়টি নিয়ে আরও স্টাডি করার কথা জানান তিনি।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্যসচিব রফিকুল আলম মজনুর সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদ, যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, সিনিয়র সহসভাপতি মোরতাজুল করিম বাদরু, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্যসচিব আমিনুল হক, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল, ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন প্রমুখ বক্তৃতা করেন।

বিএ

শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..