নির্বাচনী সহিংসতায় এক চেয়ারম্যান প্রার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় পাবনা সদর উপজেলার ভাড়ারা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদের নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন।
শনিবার সকালে এই ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থীর সাথে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের প্রচারণা নিয়ে সংঘর্ষ ও গুলাগুলিতে আহত চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করা হয়।
পাবনা জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, নির্বাচন কেন্দ্রীক কোন ঘটনায় বৈধ প্রার্থী নিহত হলে নির্বাচন কমিশনের আইন অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট পদের নির্বাচন স্থগিতের বিধান রয়েছে।
পাবনা সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং অফিসার কাওছার মোহাম্মদ বলেন, স্থানীয় সরকার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন বিধিমালা ২০১০ এর বিধি ২০ (১) (২) অনুযায়ী ভাড়ারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদের নির্বাচন স্থগিত ঘোষনা দিয়ে গণ বিজ্ঞপ্তি জারী করে নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, শনিবার সকালে ভাড়ারা ইউনিয়নের চারা বটতলার ইন্দারা মোড় কালুরপাড়া এলাকায় আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবু সাঈদ খান ও তার লোকজন প্রচার প্রচারণায় বের হয়। এদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের সুলতান মাহমুদের লোকজনও বের হয়। এ সময় আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী আনারস প্রতীকের ইয়াছিন আলম (ঘোড়া প্রতীক প্রার্থীর চাচাতো ভাই) জড়ো হলে উভয় গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা দাওয়া, সংঘর্ষ ও গুলাগুলির ঘটনা ঘটে। এ সময় উভয়পক্ষের ১০/১২ গুলিবিদ্ধসহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়।
আহতদের পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আংকাজনক হওয়ায় তাদের রাজশাহীতে স্থানান্তর করা হয়। এদের মধ্যে আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ইয়াছিন আলম নাটোরের বনপাড়ায় পৌঁছানের পর মারা যান।
এদিকে বিকেলে এই হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে, দোষীদের গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবীতে এলাকাবাসী এলাকায় খন্ড খন্ড বিক্ষোভের পর পাবনা শহরের আব্দুল হামিদ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ ও অবস্থান করে। এ সময় নিহত ইয়াছিন আলমের মরদেহ পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়ার সময়ে আটকিয়ে দেয়া হয়। প্রায় ঘন্টাব্যাপী বিক্ষোভের পর সন্ধ্যার দিকে পুলিশের উধ্বতন কর্মকর্তাদের আশ্বাসে তারা সড়ক অবরোধ ছেড়ে দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এ সময় প্রায় ৩০ মিনিট শহরের প্রধান সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে।
পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, পুলিশ ঘটনা তদন্তে কাজ করছে। কোন পক্ষই অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।