রাজশাহীতে ম্যাংগো ক্যালেন্ডার মেনে চলমান বছরের আম পাড়া শুরু হয়েছে। তবে সব উপজেলার আম একসাথে পাড়া হচ্ছে না। প্রথম দিন পাড়া হচ্ছে গুটি জাতের (চোষা আম) আম।
তবে জাতআম খ্যাত রসালো গোপালভোগের জন্য অপেক্ষা করতে হবে আরও ২ দিন। বেঁধে দেওয়া সময় অনুযায়ী আগামী ১৫ মে গাছ থেকে পাড়া শুরু হবে রাজশাহীর সর্বোচ্চ বিক্রিত সুমিষ্ট জাতের এই আম।
আজ সকালে বৈশাখে পরিপক্ব হওয়া গুটি জাতের এই আম সংগ্রহের মধ্য দিয়েই এর আনুষ্ঠানিকতা শুরু করেন বাগানিরা।
এর আগে রাজশাহীতে আম পাড়ার সময় বেঁধে দেয় জেলা প্রশাসন। অসময়ে আম সংগ্রহ বন্ধ রাখতে গত পাঁচ বছরের ধারাবাহিকতায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আজ থেকে গুটি আম পাড়তে পারছেন চাষিরা। রাজশাহী জেলা প্রশাসনের ম্যাংগো ক্যালেন্ডারের নির্দেশনানুসারে ৪ মে থেকে মৌসুম চলবে ২০ আগস্ট পর্যন্ত।
তবে কাটিমন ও বারি আম-১১ সারা বছরই সংগ্ৰহ করা যাবে। এছাড়া অন্যান্য জাতের আম নির্ধারিত সময়ের আগে বাজারে পেলেই ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন। তবে কারও বাগানে নির্ধারিত সময়ের আগেই আম পেকে গেলে তা স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করতে হবে।
পুঠিয়া উপজেলার ভাল্লুকগাছি গ্রামের আবুল হোসেন জানান, তারা প্রথম দিন গুটি জাতের আম পাড়া শুরু করেছেন। সাধারণত এই আমের স্বাদ কম। অনেকটা টক-মিষ্টি স্বাদের। গুটি জাতের এই আম বাজারে সর্বোচ্চ ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা দরে বিক্রি হবে। ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি পড়বে। আর এই আম নতুন ফল হিসেবে খুচরা বাজারে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হবে। মূলত আগামী ১৫ মে থেকে উন্নত জাতের আম গোপালভোগ পাড়া শুরু হবে। এরপর এক এক করে খিরশাপাত (হিমসাগর) ও ল্যাংড়াসহ বিভিন্ন নাম ও জাতের আম বাজারে উঠবে।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মোজদার হোসেন বলেন, বাজারে নিরাপদ, বিষমুক্ত ও পরিপক্ব আম নিশ্চিত করতে এ বছরও ‘ম্যাংগো ক্যালেন্ডার’ প্রণয়ন করা হয়েছে। নির্দিষ্ট এই ক্যালেন্ডার অনুযায়ী গাছ থেকে আম সংগ্রহ করতে হবে। তবে আবহাওয়া জনিত কারণে কোথাও আম আগে পরিপক্ব হয়ে গেলে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কৃষি কর্মকর্তাকে অবহিতের মাধ্যমেও কৃষকরা সেই আম পাড়তে পারবেন।
তিনি আরও জানান, রাজশাহীতে এই বছর ১৯ হাজার ৫৭৮ হেক্টর জমিতে প্রায় ৩৩ লাখ ৬৩ হাজার ৯৮৬টি আম গাছ রয়েছে। এবার জেলায় ৯৫ ভাগ গাছে মুকুল এসেছিল। গত বছর ১৮ হাজার ৫১৫ হেক্টর জমিতে আমবাগান ছিল। এবার বাগান বেড়েছে ১ হাজার ৬৩ হেক্টর জমিতে। এ বছর হেক্টর প্রতি ১৩ দশমিক ২০ মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলে জেলায় এ বছর মোট ২ লাখ ৫৮ হাজার ৪৫০ মেট্রিক টন আম উৎপাদন হবে। সব মিলেয়ে চলতি মৌসুমে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকার আম বাণিজ্যের প্রত্যাশা করছেন তারা।
রাজশাহী জেলা প্রশাসক মো. শামীম আহমেদ জানান, বুধবার (৩ মে) সংশ্লিষ্ট সকলের সমন্বয়ে সভা করে এ বছরের ম্যাংগো ক্যালেন্ডার ঘোষণা করা হয়েছে। আজ থেকে সেই বেঁধে দেওয়া সময় মেনে কৃষকরা তাদের গাছের আম পাড়তে পারবেন।
জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ের দেওয়া আম নামানোর সূচি অনুযায়ী আগামী ১৫ মে দ্বিতীয় দফায় পাড়া হবে জাতআম গোপালভোগ। এরপর আমের জাত ভেদে নির্ধারিত সাতটি ধাপে ২০ আগস্ট পর্যন্ত রাজশাহীর বাজারে জনপ্রিয় লক্ষ্মণভোগ, রানিপছন্দ, খিরসাপাত, ল্যাংড়া, আম্রপালি, ফজলিসহ অন্যান্য জাতের আম নামবে।
উল্লেখ্য, বেঁধে দেওয়া সময় অনুযায়ী গোপালভোগ নামানো যাবে ১৫ মে থেকে। এছাড়া লক্ষ্মণভোগ বা লখনা ও রানিপছন্দ ২০ মে এবং হিমসাগর বা খিরসাপাত ২৫ মে থেকে নামিয়ে হাটে তুলতে পারবেন বাগানমালিক ও চাষিরা। আর ৬ জুন থেকে ল্যাংড়া, ১৫ জুন থেকে ফজলি ও ১০ জুন আম্রপালি এবং ১০ জুলাই থেকে আশ্বিনা ও বারি আম-৪ নামানো যাবে। ১০ জুলাই থেকে গৌড়মতি আম এবং ২০ আগস্ট ইলামতি আম নামানো যাবে।
বিএ/
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল :[email protected], মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০
Copyright © 2024 Onusandhan. All rights reserved.