সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৫১ অপরাহ্ন

রাজশাহী ওয়াসার পানের অযোগ্য পানির তিনগুণ মুল্য নির্ধারন, মহানগরবাসির ক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপলোডের সময় : মঙ্গলবার, ১৮ জানুয়ারী, ২০২২

রাজশাহী ওয়াসার পানির মান নিয়ে অভিযোগের কোন অন্ত নেই। বিশেষ করে পানের অযোগ্য ও দুষিত পানি সরবরাহ তা নিয়ে মহানগর-বাসীর রয়েছে ব্যাপক অভিযোগ ।

ওয়াসা বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ব্যবস্থা না করে উল্টো এখন তিনগুন বেশি দামে পানি বেঁচে ঘুরে দাঁড়ানোর পরিকল্পনা করছেন দেউলিয়া হয়ে পড়া সরকারি এই প্রতিষ্ঠানটি।

রাজশাহী ওয়াসা বছরের পর বছর ধরে ব্যবহারের অযোগ্য পানি সরবরাহ করে মহানগরবাসীকে স্বাস্থ্য ঝুকির মধ্যে ফেলানোর পর এবার পানির দাম তিনগুনের বেশী বাড়াতে যাচ্ছে । ওয়াসার এমন পদক্ষেপ কে সাধারন মানুষ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করছেন। তবে ওয়াসার এমন প্রস্তাবকে অযৌক্তিক এবং গ্রাহকের ওপর নির্যাতনমূলক বলে উল্লেখ করেছেন ক্ষুব্ধ মহানগরবাসী।

মহানগর বাসীর অভিযোগ, রাজশাহী ওয়াসা যে পানি সরবরাহ করে তা একেবারে পানযোগ্য নয়। ওয়াসার সরবরাহ করা পানি পানের ফলে মানুষ ধীরে ধীরে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। রাজশাহী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ওয়াসার পানি পরীক্ষা করে দেখতে পেয়েছে এ পানিতে রয়েছে দুষিত টোটাল কলিকর্ম ধরণের ব্যাকটেরিয়া। এটি মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। নগরীর বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে পানির নমুনা নিয়ে ওয়াসা কর্তৃপক্ষ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে পাঠিয়েছিল পরীক্ষার জন্য। পানিতে ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি রয়েছে পরীক্ষায় প্রমাণও মিলেছে ।

সম্প্রতি রাজশাহী ওয়াসা কতৃপক্ষ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়েছেন আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকেই পানি সরবরাহের জন্য নতুন মূল্য কার্যকর করবে ।

ওয়াসার পানির মুল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদ জানিয়ে রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারন সম্পাদক জামাত খাঁন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন…রাজশাহীতে ওয়াসা মানসম্মত পানি না সরবারহ করে আগামী মাস থেকে পানির দাম অতিরিক্ত ৩গুন বাড়াতে যাচ্ছে। জনগণের কোন মতামত ও গণশুনানি না করেই এই সিদ্ধান্ত জনগণের উপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। রাজশাহীতে নেই কোন বড় শিল্প কলকারখানা নেই কোন বড় ব্যবসা বাণিজ্য, বেকার সমস্যা প্রকট। হতাশায় মানুষ দিন গুনছে করোনা কালীন থেকে এই পর্যন্ত মানুষের ব্যবসা বাণিজ্য, বেকারত্ব বেড়ে নিন্ম পর্যায়ে এসেছে। অর্থনৈতিকভাবে মানুষ পঙ্গু হতে যাচ্ছে।

এমতাবস্থায় রাজশাহীর ওয়াসা কোন গ্রাহকের চিন্তা না করেই যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে রাজশাহীর গণমানুষের আয়ের সাথে সংগতি রেখে গণশুনানির মাধ্যমে পানির দাম নির্ধারন করার জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্ববান জানাচ্ছি। প্রয়োজনে সরকারকে ভুর্তুকি দিয়ে হলেও জনগণকে স্বাভাবিক দামে পানি সরবারহ করার কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবে। অন্যথায় রাজশাহীর গণমানুষ পানির অতিরিক্ত মূল্য দিবে না। এই হটকারী সিদ্ধান্তের বিষয়ে সকলকে সচেতন হওয়ার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। দাবি না মানলে রাজপথে কঠিন আন্দোলন করে জনগনের দাবি পুরণ করতে হবে।

এবিষয়ে রাজশাহী ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাকীর হোসেন বলেন, নিজেদের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য এ সিদ্ধান্ত ।
তিনি বলেন, রাজশাহী ওয়াসা বোর্ডের সদস্যদের নিয়ে গভীর চিন্তা ভাবনা করে গ্রাহকদের বিষয়ে বিবেচনা করে আমরা নতুন করে পানির বর্ধিত মুল্য নির্ধারন করেছি। কার্যকর করতে সরকার আমাদের একটি অনুমোদন দিয়েছে। সেটি আমরা বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করেছি।

জানাগেছে, রাজশাহী মহানগরীতে ৪৬ হাজার ৪শত গ্রাহকদের সংযোগ লাইনে প্রতিদিন প্রায় ১১ কোটি ৩২ লাখ লিটার পানির প্রয়োজন হয়। সেখানে রাজশাহী ওয়াসা সরবরাহ করতে পারে ৯ কোটি লিটার পানি। চলমান এই পরিস্থিতিতে পানির ঘার্টি রয়েছে প্রায় আড়াই কোটি লিটার।

তবে আগামী ১ ফেব্রুয়ারী থেকে ওয়াসার পানির দাম বাড়ানোর এমন সিদ্ধান্তে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাজশাহী মহানগরবাসী।

বিএ/

শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..