ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলা যুবলীগের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে গতকাল বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বাসভবনসহ কয়েকটি স্থানে বোমা ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। যুবলীগের বিবদমান দুই পক্ষের বিরোধের জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে উপজেলা সদরে ১৪৪ ধারা জারি করায় যুবলীগের সম্মেলন হয়নি।
বোমা ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থানীয় প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে। যুবলীগের নেতা-কর্মীদের দাবি, ময়মনসিংহ-৩ আসনের (গৌরীপুর) সংসদ সদস্য নাজিম উদ্দিন আহমেদের পছন্দের প্রার্থীরা সংগঠনের নেতৃত্বে আসতে পারবেন না—এমন আশঙ্কা থেকে বোমা ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। পরে সংসদ সদস্যের কুশপুত্তলিকা পুড়িয়ে বিক্ষোভ দেখানো হয়।
ইউএনও মর্জিনা আক্তার বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে সাংঘর্ষিক অবস্থার কারণে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না পাওয়া পর্যন্ত এ আদেশ বহাল থাকবে।
উপজেলা প্রশাসন ও যুবলীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৪ বছর পর বৃহস্পতিবার গৌরীপুর যুবলীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল। ভোটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচনের বিষয়েই বেশির ভাগ নেতা-কর্মী একমত ছিলেন। বুধবার রাত ১২টার দিকে উপজেলা সদরের বঙ্গবন্ধু চত্বরে মঞ্চ নির্মাণের কাজ শেষ হয়। একপর্যায়ে মঞ্চে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার সকালে ইউএনওর বাসভবনে একটি হাত বোমা নিক্ষেপ করে দুর্বৃত্তরা। এ ছাড়া দুপুর ১২টা পর্যন্ত উপজেলা সদরের সিনেমা হল রোড মোড়, স্টেশন রোড মোড়, বালুয়াপাড়া মোড়, কলীপুর মধ্যম তরফ মোড় এলাকায় বোমা ও ককটেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ইউএনও উপজেলা সদরে ১৪৪ ধারা জারি করেন।
যুবলীগের নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণের ছয় মাস আগে সাংসদ নাজিম উদ্দিন আহমেদ নিজের ছেলে রাজীবকে উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক করার জন্য কেন্দ্রীয় যুবলীগের কাছে লিখিত অনুরোধ করেন। এ খবর উপজেলায় জানাজানি হলে সংসদ সদস্য তা অস্বীকার করেন। নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই সংসদ সদস্যের সমর্থকেরা বোমা ও ককটেল ফাটিয়ে সম্মেলন পণ্ড করেন।
সম্মেলন পণ্ড হওয়ার খবর ছড়িয়ে পরলে পৌর শহরের কালিখলা এলাকায় উত্তেজিত নেতা-কর্মীরা সংসদ সদস্যের কুশপুত্তলিকা দাহ করে বিক্ষোভ করেন। গৌরীপুরের বাসিন্দা ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাবেক সহসম্পাদক মোর্শেদুজ্জামান সেলিম প্রথম আলোকে বলেন, যুবলীগের বেশি ভাগ নেতা-কর্মী সম্মেলন চাইলেও সংসদ সদস্যের অনিচ্ছার কারণে শেষ পর্যন্ত সম্মেলন পণ্ড হয়েছে। বোমাবাজি ছিল পরিকল্পিত।
এ বিষয়ে গৌরীপুর উপজেলা যুবলীগের বর্তমান সভাপতি মো. সানাউল হক বলেন, সংসদ সদস্যের অনিচ্ছার কারণেই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়নি।
সাংসদ নাজিম উদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার কোনো গ্রুপ নেই। গৌরীপুর আওয়ামী লীগের কোনো গ্রুপিং নেই। আমি ছেলের জন্য যে লিখিত চিঠি দিয়েছিলাম, সেটি পরবর্তী সময়ে প্রত্যাহার করেছি। মূলত যুবলীগের বিবদমান দুই পক্ষের কারণেই সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে।’
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল :[email protected], মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০
Copyright © 2024 Onusandhan. All rights reserved.