মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:২৮ অপরাহ্ন

মহাদেবপুরে চালের দাম বৃদ্ধির অন্তরালে মজুদদারি

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপলোডের সময় : রবিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

দেশের অন্যতম ধান-চালের মোকাম নওগাঁর মহাদেবপুরে চিকন চালের কদর বেড়েছে। এই সুযোগে অধিক লাভের আশায় অসাধু ব্যবসায়ীরা ধান কিনে মজুদ করে রেখেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে প্রতি সপ্তাহে বাড়ছে চলের দাম। মনিটরিং না থাকায় চালের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির মাধ্যমে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে মজুদদাররা। উপজেলায় উৎপাদিত চাল স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন বাজারে যায়। মহাদেবপুরে চালের দাম বৃদ্ধি পেলে এর প্রভাব পড়ে রাজধানীসহ সারা দেশের বাজারে।

চাল ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত তিন দিনের ব্যবধানে পাইকারি বাজারে চিকন চালের দাম কেজিপ্রতি ৩-৫ টাকা বেড়েছে। খুচরা বাজারেও তাই। কিন্তু মোটা চালের দাম কমেছে কেজিপ্রতি ১-২ টাকা। চিকন চালের দাম বাড়ার কারণ হিসেবে তারা জানান, বাজারে চিকন চালের চাহিদা প্রচুর। সব শ্রেণিপেশার মানুষই এখন চিকন চাল পছন্দ করেন। মোটা চালের চেয়ে চিকন চালের দাম কেজিপ্রতি ২০-২৫ টাকা বেশি হলেও কেউ আর মোটা চাল কিনতে চাননা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অসাধু ব্যবসায়ীরা ধান কিনে নিজস্ব গোডাউনে মজুদ করে রেখে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করায় বেড়েছে চালের দাম। উপজেলা সদর ও আশপাশের কমপক্ষে ৮ জন মজুদদার হাজার হাজার মণ ধান মজুদ করে চালের বাজার অস্থির করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এদের মধ্যে কারো কারো চালকল চালু নেই। এরা শুধু ধান মজুদ করে বলে অভিযোগ রয়েছে। উপজেলা সদরের ফাজিলপুর, নাটশাল, শিবগঞ্জমোড় ও দোহালীতে এসব মজুদদারদের বড় বড় গুদামে হাজার হাজার মণ ধান মজুদ রয়েছে বলে একাধিক বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।

উপজেলা সদরের পাইকারি চাল বিক্রেতা মেসার্স সোনালী ট্রেডার্সের মালিক শ্রী কমল কুমার খৈতান জানান, তার আড়তে প্রচুর মোটা চাল জমা আছে। কিন্তু বিক্রি হচ্ছেনা। তিন দিন আগে তিনি স্বর্ণা-৫ জাতের মোটা চাল বিক্রি করেছেন প্রতিকেজি ৪২ টাকা দরে। এখন বিক্রি করছেন ৪০ টাকায়।

উপজেলার আখেড়া এলাকার মেসার্স শিউলি অটো রাইস মিলের মালিক ও চালকল মালিক গ্রæপের সাবেক সভাপতি আব্দুল জব্বার জানান, তিন দিন আগে মিলগেটে চিকন জিরা শাইল চাল বিক্রি করেছেন কেজিপ্রতি ৫৪ টাকা, মিনিকেট ৫৬ টাকা ও কাটারিভোগ ৫৮ টাকায়। এখন সবগুলোই কেজিপ্রতি ৩-৫ টাকা বেশিতে বিক্রি হচ্ছে।

বাংলাদেশ অটোরাইস মিল ওনার্স এসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওসমান গণি বলেন, সাধারণ কৃষকের ঘরে এখন ধান নেই। তাই বাজারে চিকন ধান ওঠছেনা। কিন্তু বড় ব্যবসায়ীরা ধান কিনে মজুদ করেছেন। বাজার উর্ধমুখী থাকায় অধিক লাভের আশায় তারা ধানগুলো এখন বাজারে ছাড়ছেন না। এ কারণে চালের বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে।

মহাদেবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজানুর রহমান মিলন জানান, গতবছর তিনি কয়েকটি মিলে ধান মজুদ রাখার দায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে জরিমানা আদায় করেন। চলতি বছর নওগাঁ জেলা প্রশাসক ইতিমধ্যেই বাজার নিয়ন্ত্রণে মনিটরিং ও মজুদদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ শুরু করেছেন।

বিএ

শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..