ভ্যাকসিন কেনা ও ব্যবস্থাপনার নামে নিশিরাতের সরকার রাষ্ট্রের তথা জনগণের ২৩ হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বুধবার (১৩ এপ্রিল) রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রিজভী বলেন, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) প্রকাশিত গবেষণা রিপোর্টে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ মোকাবিলায় সরকারের ভ্যাকসিন কেনা ও ব্যবস্থাপনায় ২৩ হাজার কোটি টাকার গরমিল রয়েছে।
তিনি বলেন, ভ্যাকসিন কেনা ও ব্যবস্থাপনার নামে নিশিরাতের সরকার রাষ্ট্রের তথা জনগণের ২৩ হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছে। প্রাক্কলিত ব্যয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী প্রদত্ত হিসাবের অর্ধেকেরও কম। এ ছাড়াও ১০ দশমিক ১ শতাংশ নাগরিক টিকার জন্য ঘুষ দিতে বাধ্য হয়েছেন। ১ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার টাকার বিনিময়ে পছন্দ অনুযায়ী টিকা দেওয়া হয়েছে। টিকা না নিয়েও টাকার বিনিময়ে প্রবাসীরা টিকা সনদ সংগ্রহ করেছেন।
রিজভী আরও বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ পৃথিবীর প্রত্যেকটা দেশের জন্য বিপদ আর আমাদের দেশের আওয়ামী লীগের লোকজনের কাছে মহাউৎসবের। তাই করোনা মানবজাতির জন্য ভীতির কারণ হলেও আওয়ামী ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর কাছে ছিল ‘আনন্দবার্তা’। তারা রাজনীতি করছেন দুর্নীতির কাছে নিঃস্বার্থ আত্মনিবেদনের জন্য। আর উন্নয়ন মানে তাদের পকেটের উন্নয়ন।
‘সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের পৃষ্ঠপোষকতায় দুর্নীতি মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতিটি সেক্টরে পিলে চমকানো বড় বড় দুর্নীতির খবর বেরুলেও আজ পর্যন্ত কোনো দুর্নীতির বিচার হয়নি। বরং দুর্নীতি ও দুর্নীতিবাজদের বাঁচানো এ সরকারের দুটি বিরল গুণ। এরা দুর্নীতিকে জায়েজ করতে জাতীয় সংসদে পর্যন্ত দায়মুক্তির আইন পাস করা হয়। ২০২১ সালের বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে গতকাল যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বার্ষিক প্রতিবেদনেও বাংলাদেশে দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া, দুর্নীতির দায়মুক্তি এবং বিচারহীনতার কথা তুলে ধরা হয়েছে।’
বিএনপির এ মুখপাত্র বলেন, গত ১০ মার্চ রাজধানীর জাতীয় কিডনি রোগ ও ইউরোলজি ইনস্টিটিউটে কিডনি দিবসের অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, করোনার টিকা কেনা ও টিকাদান কার্যক্রম মিলে সরকারের প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। অপরদিকে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব লোকমান হোসেন মিয়া গত কয়েক মাসে একাধিক অনুষ্ঠানে বলেছেন, টিকা কেনায় প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে। এটা থেকে যে কেউ অনুমান করতে পারেন ২৩ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির আসল রহস্য। চরমভাবে ব্যর্থ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে রাজপথে বিক্ষোভ ও গণক্ষোভ হলেও সরকার কেন তাকে স্বপদে বহাল রেখেছে তা টিআইবির গবেষণা প্রতিবেদনে উন্মোচন হলো।
তিনি বলেন, দেশের জনগণ এ ২৩ হাজার কোটি টাকা কারা লুটপাট করল তার হিসাব চায়। বিরোধী দলের নেতাদের হয়রানির জন্য ওঁৎপেতে থাকা দুদককে বলব তদন্ত করে ২৩ হাজার কোটি টাকার হিসাব বের করুন। এ সমস্ত নজীরবিহীন দুর্নীতির হিসাব জনগণকে দিতেই হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন ও স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু প্রমুখ।
বিএ