সদ্য পদত্যাগী তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. মুরাদ হাসান পরিবার নিয়ে থাকেন রাজধানীর ধানমন্ডির ১৫ নম্বর সড়কের একটি ভবনের চার তলায়। ওই ভবনের দ্বিতীয় তলায় তাঁর ব্যক্তিগত অফিসও রয়েছে। কিন্তু ধানমন্ডির বাসার বদলে প্রায়ই তিনি রাজধানীর পাঁচ তারকা হোটেল সোনারগাঁওয়ের স্যুইটরুমে রাত্রিযাপন করতেন বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। অভিযোগের সপক্ষে প্রমাণও মিলছে মুরাদ হাসান-এর ফাঁস হওয়া অডিওতে। এতে তিনি চিত্র নায়িকা মাহিয়া মাহিকে হোটেল সোনারগাঁওয়ের স্যুইটরুমে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
সংগত কারণেই প্রশ্ন উঠছে- রাজধানীতে নিজের বাসা থাকার পরও মুরাদ হাসান কেন সোনারগাঁও হোটেলে প্রায়ই রাত কাটাতেন? এ প্রসংগে জানতে চাইলে সোনারগাঁও হোটেল কর্তৃপক্ষ গ্রাহক নিরাপত্তার অজুহাতে এই সংক্রান্ত তথ্য জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
একাধিক সূত্র এই জানিয়েছে, মুরাদ হাসান বেপরোয়া জীবন-যাপন করতেন। প্রায় রাতেই হোটেল সোনারগাঁওয়ে পার্টি আয়োজন করতেন। এসব পার্টিতে একাধিক মডেলসহ শো-বিজের অনেকে উপস্থিত থাকতেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্রলীগ নেতা জানান, মুরাদ হাসান হোটেল সোনারগাঁওয়ে রাতপ্রতি কিং স্যুইটরুমের জন্য ভাড়া বাবদ ভ্যাটসহ ৩০ হাজার টাকার বেশি ব্যয় করতেন। কখনো কখনো পার্টি আয়োজনে খরচ করতেন ২-৫ লাখ টাকা পর্যন্ত। এই নেতা নিজেও ডা. মুরাদ-এর পার্টিতে একবার মদ্যপানের সুযোগ পেয়েছিলেন বলে জানান।
ডা. মুরাদ হাসান-এর ব্যক্তিজীবন সম্পর্কে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির এক নেতা বলেন, যে ব্যক্তি ধানমন্ডিতে বাসা ও অফিস থাকার পরও সোনারগাঁও হোটেলে রাত কাটাতে যায়, সেই ব্যক্তি কেমন চরিত্রের তা বলার রুচি নেই। এছাড়া সোনারগাঁও হোটেলে সে কেন থাকতো, সেটি তো তার কলরেকর্ডই বলে দিচ্ছে। এর বাইরে বলার কী আছে!
প্রসংগত, একটি রাজনৈতিক পরিবারের এজন নারী সদস্যকে নিয়ে অশ্লীল ও অবমাননাকর মন্তব্য এবং ফোনোরকর্ড ফাঁস হওয়ার পর সব মহলের সমালোচনার মুখে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রলায়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন মুরাদ হাসান।
১৯৭৪-এর ১০ অক্টোবর জামালপুরের সরিষাবাড়ি উপজেলায় জন্ম নেওয়া মুরাদ হাসান রাজনীতিতে যোগ দেন ১৯৯৬-এ। ময়মনসিংহ মেডিকেলে পড়াকালে ছাত্র রাজনীতির সংগে সম্পৃক্ত ছিলেন। এরপর নবম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এমপি নির্বাচিত হন।
২০১৮-এ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। ২০১৯-এর ১৯ মে দায়িত্ব পান তথ্য প্রতিমন্ত্রীর। চলতি বছর রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ও সংবিধান নিয়ে মন্তব্য করে সমালোচনার মুখে পড়েন মুরাদ হাসান।
সর্বশেষ গত পহেলা ডিসেম্বর বিএনপি’র শীর্ষ নেতা ও পরিবারের নারী সদস্যকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য করে বিপাকে পড়েন মুরাদ হাসান। একই সময়ে পরপর তার দু’টি অডিও-ভিডিও ভাইরাল হয়, যেখানে একজন চিত্রনায়িকাকে অশ্লীল ভাষায় ধর্ষণের হুমকি দেন মুরাদ হাসান।
বিএ
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল :[email protected], মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০
Copyright © 2024 Onusandhan. All rights reserved.