দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে ওয়ানডের শূন্য খাতায় এবার খানিকটা রঙ লেপে দিয়েছে বাংলাদেশ। সেঞ্চুরিয়ানে সিরিজের প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৩৮ রানে হারিয়ে প্রোটিয়াদের মাটিতে ৫০ ওভারের ক্রিকেটে প্রথম জয় পেল তামিম ইকবালের দল।
জয়ের জন্য ৩১৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশের বোলারদের ওপর চড়াও হওয়ার চেষ্টা করে দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে জানেমান মালানকে মুশফিকুর রহিমে গ্লাভসে ক্যাচ বানিয়ে প্রোটিয়াদের ১৮ রানের উদ্বোধনী জুটি থামান শরিফুল ইসলাম। আরেক ওপেনার কাইল ভেরাইনেকে সাজঘরে পাঠিয়েছেন তাসকিন আহমেদ।
ডানহাতি এই পেসারের লেংথ বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে আউট হয়েছেন ২৫ বলে ২১ রান করা ভেরাইনে। নবম ওভারের প্রথম বলে উইকেট নেয়া তাসকিন চতুর্থ বলে এইডেন মার্করামকে নিজের দ্বিতীয় শিকার বানিয়েছেন। তাসকিনের ফুলার লেংথ বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে থাকা মেহেদি হাসান মিরাজকে ক্যাচ দিয়ে শূন্য রানে আউট হয়েছেন মার্করাম।
এরপর অবশ্য দারুণ জুটি গড়ে তোলেন টেম্বা বাভুমা এবং রাসি ভ্যান ডার ডাসেন।
দুজনের জুটি জমে যখন শতরানের দিকে যাচ্ছিলো তখন বাংলাদেশকে ব্রেক থ্রু এনে দেন শরিফুল।
ডানহাতি এই পেসারের শর্ট বল লাফিয়ে উঠলে তা বাভুমার ব্যাটকে স্পর্শ করে মুশফিকের গ্লাভসে জড়ায়। তাতে ৩১ রান করা বাভুমার বিদায়ে ভাঙে ডাসেনের সঙ্গে ৮৫ রানের জুটি। বাভুমার সঙ্গে জুটি ভাঙলেও সেঞ্চুরির পথে বেশ ভালোভাবেই এগোচ্ছিলেন ডাসেন। তবে সেঞ্চুরি থেকে মাত্র ১৪ রান দূরে থাকতে সাজঘরে ফেরেন ডানহাতি এই ব্যাটার।
তাসকিনের অফ সাইডের বল লেগ সাইডে টেনে মারতে গিয়ে ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে ইয়াসির আলী রাব্বির হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়েছেন ৮৬ রান করা ডাসেন। এরপর থিতু হতে পারেননি আন্দাইল ফেহলুকায়ো। মিরাজের বলে তুলে মারতে গিয়ে ক্যাচ আউট হয়েছেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। এদিকে রাবাদা আউট হয়েছেন মিরাজের বলে তার হাতেই ক্যাচ দিয়ে।
দক্ষিণ আফ্রিকার শেষ প্রদীপ হয়ে ঠিকে থাকলেও দলকে জেতাতে পারেননি ডেভিড মিলার। বাঁহাতি এই ব্যাটারের মিরাজের বলে উইকেট থেকে বেরিয়ে এসে মারতে গিয়ে স্টাম্পিং হয়েছেন। ৭৯ রান করা মিলারের বিদায়ে ধুলিসাৎ প্রোটিয়াদের জয়ের স্বপ্ন। কেশভ মহারাজকে ফিরিয়ে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করেনে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
এর আগে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই দেখেশুনে খেলেছেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার তামিম ও লিটন দাস। এর মধ্যে তামিম নিজের রানের খাতা খুলেছেন লুঙ্গি এনগিদিকে ডিপ ব্যাকওয়ার্ড অঞ্চল দিয়ে ছক্কা মেরে। আর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হাত খুলেছেন লিটন।
তিনি কেশভ মহারাজের এক ওভারেই নিয়েছেন ১৫ রান। এর মধ্যে একটি ছক্কা ও দুটি চার ছিল। তামিম হাফ সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে গিয়ে আন্দিলে ফেহলুকায়োর বলে এলবিডিব্লিউ হয়ে আউট হয়েছেন। তামিম অবশ্য রিভিউ নিয়েছিলেন যদিও কোনো লাভ হয়নি।
তামিম ফেরার পর ২১.৫ ওভারে বাংলাদেশের দলীয় সংগ্রহ একশো ছাড়ায়। খানিক বাদেই সাকিবকে নিয়ে ৬৬ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন লিটন। এর এক বল পরেই মহারাজের বলে বোল্ড হয়েছেন লিটন। মুশফিকুর রহিম অবশ্য সাকিবকে বেশিক্ষণ সঙ্গ দিতে পারেননি।
এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার মহারাজের বলে টপ এজ হয়ে ফাইন লেগে মিলারের হাতে ধরা পড়েছেন। এরপর ইয়াসির আলীকে নিয়ে বাংলাদেশের ইনিংস টেনেছেন সাকিব। এই বাঁহাতি ব্যাটার তার ইনিংসের শুরু থেকেই বলের মেরিট বুঝে খেলেছেন। আর ইয়াসির শুরুতে কিছুটা সময় নিলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হাত খুলেছেন।
ফেহলুকায়োকে লং অফ দিয়ে ছক্কা মেরে ৫০ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন সাকিব। ইয়াসির তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন ৪৪ বলে। চতুর্থ উইকেটে সাকিব-ইয়াসিরের জুটি একশো ছাড়িয়ে যায়। সাকিব ৭৭ রানে এনগিদির বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরেছেন।
পরের ওভারেই ইয়াসিরকে নিজের বলেই ক্যাচ নিয়েছেন কাগিসো রাবাদা। এরপর বাংলাদেশের রান বাড়িয়েছেন আফিফ হোসেন ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। যদিও বেশিক্ষণ তাদের রান তুলতে দেননি জানসেন। আফিফ আউট সাইড অফের বলে স্কয়ার লেগে খেলতে গিয়ে ব্যক্তিগত ১৭ রানে তিনি ক্যাচ দিয়েছেন ভ্যানডার ডাসেনের হাতে।
শেষদিকে মাহমুদউল্লাহ ২৫ রান করে আউট হয়েছেন জানসেনের বলে ডাসেনের হাতে ক্যাচ দিয়ে। এরপর মেহেদী হাসান মিরাজ ও তাসকিন আহমেদ মিলে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩০০ পার করেন। মিরাজ ১৯ ও তাসকিন ৭ রান করে অপরাজিত ছিলেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
বাংলাদেশ- ৩১৪/৭ (৫০ ওভার) (তামিম ৪১, লিটন ৫০, সাকিব ৭৭, ইয়াসির ৫০; মহারাজ ২/৫৬, জানসেন ২/৫৭)
দক্ষিণ আফ্রিকা - ২৭৬/১০ (৪৮.৫ ওভার) (ভেরাইনে ২১, ডাসেন ৮৬, মিলার ৭৯, বাভুমা ৩১; মিরাজ ৪/৬১, তাসকিন ৩/৩৬, শরিফুল ২/৪৭)
বিএ/
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল :[email protected], মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০
Copyright © 2024 Onusandhan. All rights reserved.