মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে মুক্তিযুদ্ধে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে শনিবার সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তারা।
ভোর ৫টা ৫৬ মিনিটে রাষ্ট্রপতি শ্রদ্ধা নিবেদনের পরপরই শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এরপর কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন তারা।
এ সময় সশস্ত্র সালাম জানায় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর সুসজ্জিত চৌকস একটি দল। বেজে ওঠে বিউগলের করুণ সুর।
আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দলের সভাপতি হিসেবে আরও একবার শ্রদ্ধা নিবেদন করেন শেখ হাসিনা। সঙ্গে ছিলেন দলের জ্যেষ্ঠ ও কেন্দ্রীয় নেতারা।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদের নেতৃত্বে শ্রদ্ধা নিবেদন করে কেন্দ্রীয় ১৪ দল। এরপর শ্রদ্ধা জানাতে আসেন জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমীন চৌধুরী।
এরপর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের নেতৃত্বে স্মৃতিসৌধে আসা বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা শ্রদ্ধা জানান।
রাষ্ট্রীয় আয়োজন শেষে স্মৃতিসৌধ খুলে দেয়া হয় সব শ্রেণি-পেশার মানুষের জন্য। ঢাকায় অবস্থানরত বিদেশি কূটনীতিক, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষ ফুল দিয়ে বিনম্র চিত্তে স্মরণ করেন মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের।
করোনাভাইরাস মহামারি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে এলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়টিতে জোর দিয়েছে সরকার। তাই স্মৃতিসৌধ আমন্ত্রিত অতিথিদের ভোর ৫টা ২০ মিনিটের পরিবর্তে ৭টা ১৫ মিনিটে আসার অনুরোধ জানায় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
করোনা সংক্রমণের তীব্রতা কমে যাওয়ায়, ভোর থেকে স্মৃতিসৌধে ভিড় করেন শ্রদ্ধাবনত হাজারো মানুষ। পরাধীনতার শৃঙ্খল ভাঙতে জাতির যে বীর সন্তানেরা জীবন উৎসর্গ করেছেন, কৃতজ্ঞচিত্তে তাদের স্মরণ করছে গোটা দেশ।
এদিকে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণ করেছে সশস্ত্র বাহিনী।
সাভার থেকে ফিরে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে গণভবনে সকাল ৮টায় ‘বঙ্গবন্ধু কর্তৃক ২৬ মার্চ ১৯৭১ তারিখে প্রদত্ত স্বাধীনতার ঘোষণা গ্রহণ ও প্রচারকারী- সলিমপুর ওয়্যারলেস স্টেশন’-এর ওপর প্রকাশিত স্মারক ডাকটিকিট, উদ্বোধনী খাম ও সিলমোহরও অবমুক্ত করবেন প্রধানমন্ত্রী।
রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনসংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির আয়োজনে ‘জয় বাংলার জয়োৎসব’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় গণভবন প্রান্ত থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত হবেন তিনি।
স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস সরকারি ছুটির দিন। অলিগলিতে বাজবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কালজয়ী ভাষণ আর মুক্তিযুদ্ধে অনুপ্রেরণা জোগানো সেইসব অবিস্মরণীয় গান। এদিন বাড়িতে বাড়িতে, যানবাহনে উড়বে চির অহংকারের লাল-সবুজের পতাকা।
বিএ