হিমাগারে আলু নেওয়াকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) ভোর ৪টার দিকে মুন্সিগঞ্জ সদরে পজেলার চরকেওয়ার ইউনিয়নের ফকিরকান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তির নাম মো. জুয়েল ফকির (২৮)। তিনি ওই এলাকার মো. হাফিজ উদ্দিন ফকিরের ছেলে। তিনি মুন্সিরহাট এলাকায় ফলের ব্যবসা করতেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে চরকেওয়ার ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি হারুন অর রশিদ ফকির ও সাধারণ সম্পাদক মন্টু দেওয়ান বংশের লোকজনের সঙ্গে দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়ে তাদের মধ্যে আগেও কয়েকবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। কয়েক বছর আগে স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করা হয়।
তবে কয়েকদিন ধরে জমি থেকে ট্রলিতে করে আলু হিমাগারে নেওয়াকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে নতুন করে বিরোধ তৈরি হয়। জমি থেকে হিমাগারে ফকির বংশের লোকজনদের আলু নিতে বাধা দিচ্ছিলেন দেলোয়ার ঢালি ও দেওয়ান বংশের লোকজন। এ নিয়ে বুধবার তাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। রাতে ফকির বংশের ওপর ঢালি ও দেওয়ানরা হামলা করে। এতে ফকির বংশের জুয়েল ফকির নিহত হন।
নিহতের ভাগনে ডালিম ফকির বলেন, আমার মামার বংশের লোকজন আড়াই হাজার শতাংশ জমিতে আলু চাষ করেছে। আমরা কয়দিন ধরে ক্ষেতের আলু তুলে হিমাগারে নিচ্ছি। কিন্তু তারা আমাদের বাধা দিচ্ছিল।
নিহতের ভাবি সুমি বেগম বলেন, হামলা করে তারা বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়েছে। জুয়েল বাঁচার জন্য ভোর ৪টার দিকে মসজিদের দিকে যাচ্ছিল। সেখান থেকে মন্টু পক্ষের লোকজন তাকে ধরে নিয়ে যায়। ভোরে জমির মধ্যে দেবরের লাশ পেয়েছি।
নিহত জুয়েলের বাবা হাফিজ উদ্দিন ফকির বলেন, খুব কষ্ট করে ছেলেদের বড় করেছি। তিনটা ছেলে আমার। জুয়েল মেঝ ছিল। সে ফলের ব্যবসা করত। হিমাগারে আলু নেওয়াকে কেন্দ্র করে আমার ছেলেটাকে মন্টুরা মেরে ফেলল। আমি এর বিচার চাই।
চরকেওয়ার ইউপি চেয়ারম্যান আফসার উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, উপজেলায় আওয়ামী লীগের তিনটি পক্ষ ফকির, ঢালী, দেওয়ান। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ফকির ও ঢালী বংশের মধ্যে পাঁচ বছর ধরে দ্বন্দ্ব চলছিল। এ বিষয়ে স্থানীয়ভাবে সালিস মীমাংসা করা হয়। গত কয়েক দিন ধরে জমি থেকে হিমাগারে আলু নেওয়াকে কেন্দ্র করে নতুন করে বিবাদ তৈরি হয়। এ ঘটনায় বুধবার রাতে পক্ষ দুটি সংঘর্ষে জড়ায়। বৃহস্পতিবার ভোরে মন্টু পক্ষের লোকজনের হামলায় জুয়েল মারা গেছে। আমরা ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিচার দাবি করছি।
অভিযোগের বিষয়ে মন্টু দেওয়ান বলেন, আমার বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আমি কোনোভাবেই ঘটনার সঙ্গে জড়িত না। যে ছেলেটি মারা গেছে সেও রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত না। ঢালি বংশের সঙ্গে ফকির বংশের দ্বন্দ্ব আছে। হারুন ফকিররা ওই ছেলেটিকে হত্যা করে এখন প্রতিপক্ষের ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করছে।
মুন্সিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন দেব বলেন, ঘটনাটি জানার সঙ্গে সঙ্গে ওই এলাকায় পুলিশ পাঠানো হয়েছে। মূলত আলু তোলাকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে গতকাল সংঘর্ষ বাধে। এ নিয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
বিএ
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল :[email protected], মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০
Copyright © 2024 Onusandhan. All rights reserved.