রাজশাহীতে প্রায় কয়েক হাজার অবৈধ ইজিবাইক ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার লাইসেন্স না থাকলেও সড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে চালকরা। এদের মধ্যে বেশির ভাগই রয়েছে অদক্ষ ও মাদকাসক্ত ।
এসব অদক্ষ ও মাদকাসক্ত চালকদের কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হচ্ছে পথচারী ও ছাত্র-যাত্রীদের। প্রশাসনের মনিটরিং টিমের চোখের সামনে দিয়ে চলছে এসব গাড়ি। সিটি করপোরেশনের তথ্য অনুযায়ী, নগরীতে চার্জার রিকশা ৬ হাজার এবং অটোরিকশা ১১ হাজার অনুমোদন থাকলেও সড়কে চলছে দ্বিগুণেরও বেশি
ইজিবাইক ও সিএনজির বিপরীতে ড্রাইভিং লাইসেন্স ও গাড়ির লাইসেন্স নেই এসব যানের। রাস্তায় চলাচলের দক্ষতা তাদের নেই, অথচ অজ্ঞাত কারণে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন রাজশাহী শহর ও জেলা ও উপজেলার আনাছে-কানাছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট ) সরেজমিনে দেখা যায়, মহানগীর রেলগেট, বাসস্ট্যান্ড, কোর্ট, সাহেব বাজার থেকে চারটি রোড দিয়ে প্রায় ছয় থেকে সাত শতাধিক অবৈধ ইজিবাইক ও নম্বর প্লেটবিহীন সিএনজি থানা ও উপজেলা প্রশাসনের চোখের সামনে দিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এসব যানের যেমন নেই কোনো বৈধ কাগজপত্র ঠিক তেমনি তাদের রাস্তায় চলাচলের জন্য বিআরটিএ’র লাইসেন্সও নেই।
শুধু প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই চলছে এসব যানবাহন।
দেখাগেছে, অধিকাংশ সিএনজিচালকই ১৬-২০ বছর বয়সি। এর মধ্যে অনেকই আছে অদক্ষ ও মাদকাসক্ত চালক। যার কারণেই প্রায়ই দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হয় স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থী, মোটরসাইকেল চালকসহ রাস্তায় চলাচলকারিদের। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোর যথাযথ নজরদারির অভাব রয়েছে বলেও মনে করছেন অনেকেই।
বাধন নামে এক কলেজছাত্র বলেন, আমাদের কলেজের সামনে দিয়ে যেভাবে সিএনজিগুলো চলে, মাঝেমধ্যেই দুর্ঘটনার শিকার হতে হয় এবং অমিও কয়েকবার দুর্ঘটনার শিকার হয়েছি। এই সিএনজিগুলোর কোনো কাগজপত্র নেই। তাদের রাস্তায় চলাচলের জন্য যে ড্রাইভিং লাইসেন্সের প্রয়োজন তারা সেটা না মেনেই অবৈধভাবে এসব যানবাহন চালাচ্ছেন।
নাজমুল ইসলাম নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, আমি প্রতিদিন মেয়েকে নিয়ে স্কুলে যাই। যাতায়াতের পথে সিএনজির কারণে রাস্তা পার হতে ভয় লাগে। কারণ গত কয়েকদিন আগে মেয়ের স্কুল ছুটি হয়েছে রাস্তার সাইড দিয়ে হেঁটে বাসায় ফিরছিলাম, দুইটি অটোরিকশা পাল্লাপাল্লি করে আসছিলো এবং কেউ কাউকে সাইড দিচ্ছিলো না একপর্যায়ে আমার ছোট মেয়েটাকে ধাক্কা দিয়ে চলে গেলো। কীভাবে রাস্তায় চলতে হবে, স্কুল-কলেজের সামনে কীভাবে চালাতে হবে এটা ওদের জানা নেই। এজন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ বিশেষভাবে প্রয়োজন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক চালক বলেন, আমরা একাধিকবার গাড়ি ও নিজেদের লাইসেন্সের জন্য বিআরটিএ’র অফিসে গিয়ে দেখি যে, দীর্ঘলাইন আর দালালের খপ্পর তা দেখে আর কাগজপত্র করিনি। এছাড়া গাড়ি চালালেও কেউ কিছু বলে না, এজন্যে আর করেননি। সুপারভাইজার রেখেছি এবং প্রতি ট্রিপে ওকে কিছু টাকা দেই, ওই সবকিছু ম্যানেজ করে।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত উপ- পুলিশ কমিশনার মিডিয়া মোঃ জামিরুল ইসলামকে কয়েকবার মুঠোফোনে ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। সে কারণে তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
বিএ/