রাজশাহীতে হঠাৎ করে বেড়ে গেছে অটোরিকশা ভাড়া। সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকের মাধ্যমে ক্ষুব্ধ প্রক্রিয়া জানাচ্ছেন ভুক্তভোগীরা। তারা বলছেন অটো রিক্সা চালকদের বাড়াবাড়ি কেউ কি দেখার নেই।
এমন নৈরাজ্য সহ্য করা যাচ্ছে না। তারা দ্রুত আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
‘পাঁচ মিনিটের রাস্তা, ৫০ মিনিটেও শেষ হচ্ছে না। যানজটের ফায়দা লুটছেন অটোরিকশা চালকরা। যে যেমন পারছেন ভাড়া চাচ্ছেন, আবার নিচ্ছেনও। অটোরিকশাগুলো ডাবল ভাড়ার কমে যাচ্ছে না। আমরা ছেলে-মেয়েদের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ভর্তি পরীক্ষার জন্য নিয়ে এসেছি। তার আগে বিভিন্নভাবে ভাড়া জেনেছি। কিন্তু স্বাভাবিকের বাইরে অটোরিকশা চালকরা ভাড়া নিচ্ছেন। তারা কখনো বলছেন অনেক দূরের পথ। আবার যানজটের কথা বলে বেশি ভাড়া নিচ্ছেন চালকরা।
সোমবার (৩০ মে) বেলা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজলা গেটে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন আবু সাইদ তিনি কুমিল্লা থেকে মেয়ের ভর্তি পরীক্ষার জন্য রাজশাহীতে এসেছেন। প্রথম দিনে ‘সি’ ইউনিটের পরীক্ষায় অংশ নেন নূর মোহাম্মদ খানের মেয়ে মিথিলা খান। তারা রাজশাহীর প্রশংসা করেন। তবে ভাড়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
আবু সাইদ বলেন, রাজশাহী শিক্ষানগরী। এই নগরীতে প্রচুর শিক্ষার্থীর বসবাস। সেই সুবাদে সহজ বাহন অটোরিকশায় চলাচল করেন তারা। ভর্তি পরীক্ষাগুলোর সময় ভাড়ার বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। কারণ সারাদেশ থেকে মানুষ রাজশাহীতে আসেন। শুধুমাত্র অটোরিকশার ভাড়ার কারণে তাদের মনে রাজশাহী ও রাজশাহীর মানুষ নিয়ে বিরূপ ধারণা জন্মাবে।
বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বিনোদপুর বাজারে খুব একটা অটোরিকশার ভিড় নেই। তবে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন গেট থেকে শুরু করে কাজলা মোড় হয়ে তালাইমারী মোড় পর্যন্ত দীর্ঘ যানজট দেখা গেছে। যানজটের দীর্ঘ লাইনে ব্যক্তিগত তেমন গাড়ি না থাকলেও রয়েছে রিকশা ও অটোরিকশার দাপট। এই রিকশা ও অটোরিকশাগুলোকে সামাল দিতে হিমশিম থেকে হচ্ছে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার রেশ পড়েছে নগরীর ভদ্রা ও শিরোইল এলাকার বাস ও রেল স্টেশনে। এসব এলাকায় যানবাহনের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে। তবে পরীক্ষার কারণে দূরপাল্লার বাসগুলো তালাইমারী ও বিনোদপুর যেতে দিচ্ছে না পুলিশ। ফলে রাজশাহী থেকে ছেড়ে যাওয়া ঢাকামুখী যানবাহনগুলোকে বিকল্প হিসেবে ভদ্রা সড়ক দিয়ে আলিফ লাম মীম নতুন বাইপাস দিয়ে বিহাস হয়ে যেতে দেখা গেছে।
অটোরিকশা চালক দুলাল বলেন, কাটাখালী থেকে সাহেব বাজারের ভাড়া ২৫ টাকা। আর বিনোদপুর থেকে ২০ টাকা ভাড়া।
তবে পাশ থেকে অটোরিকশার যাত্রী শফিকুল ইসলাম চালকের উদ্দেশে বলেন, আপনি বেশি ভাড়া নিচ্ছেন। কাটাখালী থেকে বাজারের ভাড়া ১৭ টাকা। অনেক সময় ১৫ টাকাও নেয়। কিন্তু আপনি বেশি ভাড়া নিচ্ছেন আমাদের থেকে।
এই কথার উত্তরে অটোরিকশা চালক বলেন, তালাইমারী থেকে বিনোদপুর বাজারে যেতে সময় লাগে ১০ মিনিট। কিন্তু আজ সময় লাগছে ১ ঘণ্টার বেশি। একবার যাওয়া আসা করতে গেলে দুই ঘণ্টার বেশি সময় লাগছে। একটু বেশি ভাড়া না নিলে আমাদের পোষাবে না। আপনারা (যাত্রীরা) ভাড়া মিটিয়ে উঠেছেন অটোতে। আপনাদের না পোষালে উঠতেন না।
অপর অটোরিকশার যাত্রী বলেন, বিনোদপুর থেকে শিরোইল বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত ভাড়া ১২ টাকা আমরা জানি। কিন্তু কিছু করার নেই। অটোরিকশা কম সড়কে। বেশি ভাড়া চাইলেও অনেকেই উঠে পড়ছেন। সাধারণত বৃষ্টি হলেও রাজশাহীতে অটোরিকশা চালকরা ভাড়া বাড়িয়ে দেন। তারা ১২ টাকার ভাড়া ২০ টাকা নেন। কিছু করার নেই।
এ বিষয়ে রাজশাহী অটোরিকশা মালিক সমিতির সভাপতি শরিফুল ইসলাম সাগর বলেন, ব্যাটারিচালিত রিকশার কোনো ভাড়া নির্ধারণ করা নেই। তবে অটোরিকশাগুলোর ভাড়া নির্ধারণ রয়েছে। ব্যাটারিচালিত রিকশাগুলোর ভাড়া নিয়ে আমরাও বিব্রতকর অবস্থায় রয়েছি।
তিনি বলেন, বেশি ভাড়া নেন গ্রাম থেকে আসা অটোরিকশা চালকরা। আমরা তাদের ন্যায্য ভাড়া নেওয়ার বিষয়ে বলেছি। তবে সমস্যা হচ্ছে তাদের পাওয়া যায় না। কারণ তারা গ্রাম থেকে সকালে শহরে এসে সারাদিন রিকশা চালিয়ে আবার বাড়িতে ফিরে যায়। তারপরও কেউ যদি বেশি ভাড়া নেয় অটোরিকশার নম্বরসহ আমাদের জানালে আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।
এ বিষয়ে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) রফিকুল আলম বলেন, সারাদেশ থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের নিরাপত্তায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। একই সঙ্গে পোশাকে ও সাদা পোশাকে পুলিশ কাজ করছে। আমাদের ট্রাফিক বিভাগও ভালো কাজ করছে সড়কে।
জ/ন
উপদেষ্টা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম জুলু, প্রকাশক ও সম্পাদক : নাজমুল ইসলাম জিম, অফিস : আর,ডি,এ মার্কেট ২য় তলা,সাহেব বাজার, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া, রাজশাহী। ই-মেইল :[email protected], মোবাইল: ০১৭১১-৯৪৩৪৭১, ০১৭১৫০৫৭৪৪০
Copyright © 2024 Onusandhan. All rights reserved.